
২২ মার্চ (বুধবার) বিকাল ৫টায় বাংলাদেশ পুলিশের আয়োজনে উখিয়া থানা চত্বরে অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের এর সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ককসবাজার জেলা পুলিশ সুপার ড.একেএম ইকবাল হোসেন সুন্দর উখিয়া ও মাদক মুক্ত সমাজ নিশ্চিত করতে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি ধর্মীয় নেতাদের এগিয়ে আসতে হবে। সব ধর্মের উপাসনালয় কিন্তু রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এটা রক্ষার দায়িত্বও সবার। সকল ধর্মের কিন্তু মানবতার কল্যাণের কথা বলা হয়েছে কিন্তু কিছু ব্যক্তির ইন্ধনে ২০১২সালে রামু-উখিয়ার বৌদ্ধ বিহারে হামলা চালিয়ে ছিল। তাছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যাও একটি জাতীয় সমস্যা। তাই এলাকায় অপরিচিত কাউকে দেখলে পুলিশকে খবর দিতে বলেছেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ ও উখিয়া সার্কেল চাইলাউ মারমা বলেন, মাদক মুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ও জঙ্গী প্রতিরোধে ধর্মীয় গুরুদের মাদকের কুফল সম্পর্কে ব্যাখ্যার মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির আহবান জানান। তিনি আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অপব্যবহার রোধ করতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
রাজাপালং ইউপি চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ আ’লীগের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেছেন, উখিয়ায় মাদকের ভয়াবহতায় অনেকেই হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। তাদের আয়ের উৎস কি ? তাছাড়া রোহিঙ্গারা সংঘবদ্ধ হয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলেও তিনি জানান। এতে সবার নিরাপত্তায় শংকা দেখা দিয়েছে। তাই রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কঠোর নজরদারী ও স্থানাস্তরের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি ২৯, ৩০ সেপ্টেম্বর রামু-উখিয়ায় বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ন্যাক্কারজনক হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীও জানান। একই ধরণের বক্তব্য রাখেন পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী।
সকল ধর্মের মানুষের মাঝে সম্প্রীতি অটুট রাখতে সবার আন্তরিকতায় যথেষ্ট বলেছেন হলদিয়াপালং ইউ.পি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ আলম।
রতœাপালং ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী বলেছেন, ধর্ম যার যার, দেশটা কিন্তু সবার।
মিয়ানমারের বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা নিয়ে দুর্বৃত্তরা উস্কানি দিলেও তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি প্রশাসনের কড়া নজরদারীর কারণে। তাছাড়া বৌদ্ধ মন্দির হামলার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পুন: উদ্ধারেও সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও প্রশাসনের আন্তরিকতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উখিয়া ভিক্ষু সমিতির সভাপতি শ্রীমৎ এস. ধর্মপাল মহাথেরো ও সাধারণ সম্পাদক জ্যোতি প্রিয় থের।
কলেজ শিক্ষক প্লাবন বড়–য়া ঐতিহ্যবাহী জাদি বৌদ্ধ বিহারের জমি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও বেদখলে থাকা জমির সমস্যা সমাধানে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, এড.অনিল কান্তি বড়ুয়া, সভাপতি, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি যুব, কক্সবাজার জেলা। শিক্ষক মেধু বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক, বৌদ্ধ সুরক্ষা কমিটি, উখিয়া। রুপন বড়–য়া, সাধারণ সম্পাদক, পাতাবাড়ী আনন্দ ভবন বিহার সেবা কমিটি। উপস্থিত ছিলেন, মধু সুদন বড়–য়া মেম্বার, শিক্ষক সুবদন বড়–য়া, শিক্ষক মিলন কুমার বড়–য়া, শিক্ষক রাহুল বড়–য়া আদিত্য, শিক্ষক আশীষ বড়–য়া, হরেন্দ্র বড়–য়া, বিজন বড়–য়া, মিলন বড়–য়া, মধু বড়–য়া, শিক্ষক বিধান বড়–য়া, শিক্ষক প্রদত্ত বড়–য়া প্রমুখ সহ বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত শতাধিক বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মৌলভী জামাল্ উদ্দিন । ত্রিপিটক পাঠ করেন শ্রীমৎ কর্মেশ্বর ভিক্ষু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক প্রিয়তোষ বড়ুয়া।
পাঠকের মতামত